অনলাইন ডেস্ক ভারত-পাকিস্তানের সাপে-নেউলে সম্পর্ক এবার নেমে এলো আরও একধাপ নিচে। দুই প্রতিবেশী দেশের এবার নতুন বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে চাল নিয়ে।
কিছু দিন আগে প্রোটেকটেড জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন বা পিজিআই ট্যাগের জন্য ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে কথা বলে ভারত। বিষয় ছিল— বাসমতি চালের মালিকানা নিয়ে। সেখানে অনুমোদন পাওয়া গেলে বিদেশের বাজারে বাসমতি চালের জন্মস্থানের মালিকানা পাবে ভারত।
প্রোটেকটেড জিওগ্রাফিক্যাল ইনডিকেশন বা পিজিআই ট্যাগ হচ্ছে এমন একটি স্বীকৃতি, যা দ্বারা একটি নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলের ও সেখানকার কারিগরদের উন্নতি হয়। নির্দিষ্ট ভৌগোলিক অঞ্চলের বৈশিষ্ট্যযুক্ত সামগ্রীর ক্ষেত্রে এই ট্যাগের দাবি করা যায়।
ভারতের এ ট্যাগ দাবির বিষয়টি জানতে পেরে নড়েচড়ে বসে পাকিস্তানও। কারণ কয়েক বছর ধরেই তারা ইউরোপের বাজারে চাল রফতানিতে বড় জায়গা করেছে। আর তাদের ভয় যে, ভারত যদি ট্যাগ পায় তা হলে বিদেশের বাজারে তাদের মান কমবে।
আন্তর্জাতিকভাবে বাসমতি চালের রফতানিতে ভারত রয়েছে শীর্ষে। এ থেকে ভারতের বার্ষিক আয় প্রায় ৬.৮ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে পাকিস্তানের বার্ষিক আয় ২.২ বিলিয়ন ডলার।
তবে সম্প্রতি পাকিস্তানও চাল রফতানি অনেক বাড়িয়েছে। করোনা মহামারির মাঝে পাকিস্তানের উপার্জনের একটি বড় ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে চাল রফতানি। কিন্তু ভারত যদি বাসমতি চালের জন্মস্থানের ট্যাগ পায়, তা হলে বিদেশের বাজারে এটি প্রমাণিত হবে যে ভালো মানের বাসমতি উৎপাদন করে ভারত।
তবে ভারত এমনটি দাবি করেনি যে, সেখানেই শুধু বাসমতি চাল উৎপাদন হয়। তারা এ চালের কেন্দ্র হিসেবে দাবি করেছে নিজেদের। কেন্দ্রের দাবি ট্যাগ পাওয়া গেলে সেখানে ধানের উৎপাদনের দিকে মনোনিবেশ করা যাবে এবং আরও ভালো মানের বাসমতির চাষ করা যাবে বলে দাবি করছে তারা।
প্রধানত বাসমতি চালের ধান ভারত ও পাকিস্তানে চাষ হয়। বাসমতি নামের আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে ‘সুগন্ধি’। এটি হিমালয়ের পাদদেশের অঞ্চলগুলো, যেমন— হিমাচলপ্রদেশ, পাঞ্জাব, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড, উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি এবং জম্মু ও কাশ্মীরে চাষ হয়।
বাসমতি চালের উৎপত্তি যে প্রাচীন ভারতেই, সেটি নিয়ে ইতিহাস দেখিয়েছে ভারত। মহেঞ্জোদড়ো সভ্যতার খননের সময় এই চালের অস্তিত্বের প্রমাণ মিলেছে বলে লেখা আছে অ্যারোমেটিক রাইসেস নামে একটি বইয়ে। আর সেটির ভিত্তিতেই এমনটি দাবি করছে ভারত।
তথ্যসূত্র: নিউজ এইট্টিন।