ডেস্ক রিপোর্ট ।। বরিশাল সরকারি ব্রজমোহন (বিএম) কলেজ ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

এতে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৮০ থেকে ১০০ জন আহত হয়েছে।আহতদের শের-ই-বাংলা মেডিকেল হাসপাতালে (শেবাচিম) ভর্তি করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ১১ টা থেকে রাত ৩ টা পর্যন্ত বরিশাল নগরীর বটতলা বাজার এলাকা ও বিএম কলেজ ক্যাম্পাসে এই ঘটনা ঘটে।

এর আগে গত সোমবার রাতে নগরীর ব্যাস্টিস্ট মিশন রোডে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তাসনুভা চৌধুরী জোয়ার পরিবারের বিরোধীয় বাড়ি দখলের হুমকি ও দুই নারীকে হেনস্থা করার অভিযোগ তুলে বরিশাল বিএম কলেজ সমন্বয়ক মোস্তাফিজুর রহমান রাফিকে ববি শিক্ষার্থীরা মারধর করে। এরপর মঙ্গলবার রাতে চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলে ববি’র দুই শিক্ষার্থীকে মারধর করে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা।
এ খবর ছড়িয়ে পরলে ববি শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস থেকে তিনটি বাসে চড়ে নগরীর বটতলা এলাকার দিকে রওনা দেন। একটি বাস বটতলা এলাকায় পৌঁছানোর সাথে সাথে শিক্ষার্থী বোঝাই বাসে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে বিএম কলেজ শিক্ষার্থীরা। এ সময় ২৫ জন ববি শিক্ষার্থী আহত হন। তাদের মধ্যে ১৫ জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। বাকি দুইটি বাসেও লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায় বিএম কলেজ শিক্ষার্থীরা। এতে আরও ২০ থেকে ২৫ জন ববি শিক্ষার্থী আহত হয়।

এই হামলা ও ববির আহত শিক্ষার্থীদের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ববির শিক্ষার্থীরা বিএম কলেজের দিকে ট্রাক, বাস সহ বিভিন্ন যানবাহনে করে অগ্রসর হয়। এক পর্যায়ে বিএম কলেজ এলাকায় এই দুই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ-ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া চলে। এতে অনন্ত দুই পক্ষের প্রায় ৫০ জন শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। তাদের শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা দেওয়া হচ্ছে।

বিএম কলেজ শিক্ষার্থী কাফি মজুমদার জানান, তাদের সমন্বয়ককে মারধর করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে বিএম কলেজের শিক্ষার্থীরা। মধ্যরাতে ববির চারটি বাসে ও একটি ছোট ট্রাকভর্তি শিক্ষার্থীরা এসে আমাদের ক্যাম্পাসে হামলা চালিয়ে যাকে যেখানে যেভাবে পেয়েছে পিটিয়ে আহত করেছে। অনেকের মাথা ফেটেছে, অনেকের মারাত্মক জখম হয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।এছাড়াও বিএম কলেজের ৫ টি বাস ভাংচুর ও কলেজ ক্যাম্পাস এবং অধ্যক্ষের বাসভবনে হামলা চালিয়েছে ববি শিক্ষার্থীরা।

এ ঘটনায় বুধবার উভয় প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল ও পাল্টা পাল্টি সংবাদ সম্মেলন করে নিজেদের অবস্থান ব্যাক্ত করেছে।

এদিকে বুধবার ভোরে এ ঘটনায় বিএম কলেজ এলাকায় ববির ৬ শিক্ষার্থী আটকা পরলে তাদের মুসলেকা দিয়ে ছাড়িয়ে নেয় বর্তমানে ববির প্রশাসনিক দায়িত্বে থাকা অধ্যাপক ড. মো. মুহসিন উদ্দীন।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বরিশাল কোতয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান জানান, সোমবার রাতে বিএম কলেজ সমন্বয়ক মোস্তাফিজুর রহমান রাফিকে মারধর করে ববি শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনার পর মঙ্গলবার রাত ১১টার দিকে বটতলা এলাকায় অবস্থানকালে দুইজন ববি শিক্ষার্থীকে মারধর করে বিএম কলেজ শিক্ষার্থীরা। আহত দুই ববি শিক্ষার্থীকে উদ্ধার করে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজে ভর্তি করা হয়। দুই ববি শিক্ষার্থীদের মারধরে খবর ছড়িয়ে পড়লে দুই গ্রুপের মধ্যে হামলা ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনায় পরিস্থিতি শান্ত করার জন্য সেনাবাহিনী, পুলিশ একসঙ্গে কাজ করেছে।বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে।