শুক্রবার, ২৯শে মার্চ, ২০২৪ ইং, সকাল ১০:৩৮
শিরোনাম :
১১ দিনে প্রায় ১০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছে কুমিরটি আওয়ামী লীগ এখন সাম্প্রদায়িকতা-বর্ণবাদ ছড়াচ্ছে: ফখরুল কুমিল্লায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো:খাইরুল আলম এর পুষ্পস্তবক অর্পণ ধানমন্ডিতে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রীর শ্রদ্ধা নিবেদন ঈদযাত্রায় ট্রেনের টিকিট কিনতে ৯৫ লাখ হিট জাহাজের ধাক্কায় ভেঙে পড়লো যুক্তরাষ্ট্রের ফ্রান্সিস স্কট কি ব্রিজ চার দিনের সফরে ঢাকায় আসছেন ভুটানের রাজা পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ও জাতিসংঘ নারী প্রতিনিধির সাক্ষাৎ এ বছর প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ হবে ১৩ হাজার ৭৮১ বরিশালে হারিয়ে যাওয়া মোবাইল ফোন উদ্ধার করে প্রকৃত মালিকদের ফিরিয়ে দিল এপিবিএন পুলিশ

বরিশাল মুক্ত দিবস আজ

ডেক্সরিপোর্ট  আজ ৮ ডিসেম্বর বরিশাল মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বরিশাল থেকে পালিয়ে যাওয়ায় মুক্ত হয় শহর। নগরীর নিয়ন্ত্রণভার গ্রহণ করেন মুক্তিসেনারা।ওড়ানো হয় স্বাধীন বাংলার পতাকা। ২৫ মার্চ মধ্যরাতে ঢাকায় অপারেশন সার্চলাইট শুরু করার পর বরিশালে মুক্তিযোদ্ধারা পুলিশ লাইনের অস্ত্রাগার ভেঙে রাইফেল ও গুলি নিয়ে পালিয়ে যান।

তৎকালীন পুলিশ সুপার ফখরুল ইসলামের কাছ থেকে চাবি নিয়ে বরিশালের মুক্তিযোদ্ধারা পুলিশের অস্ত্রাগার ভেঙে শত শত রাইফেল গোলবারুদ নিয়ে, তৎকালীন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম মঞ্জুরের পেশকার বাড়ি নিয়ে যান। ২৬ মার্চ ভোরে ৯ নম্বর সেক্টর কমান্ডার এম এ জলিলকে এনে মুক্তিযোদ্ধারা বরিশালের সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে দক্ষিণাঞ্চলের প্রথম স্বাধীন বাংলা সচিবালয় গঠন করেন। ২৬ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল দীর্ঘ একমাস মুক্তিযোদ্ধারা এই স্থান থেকেই অনেক অভিযান পরিচালনা করেন।

মুক্তিযোদ্ধারা জানান, স্বাধীন বাংলার প্রথম সচিবালয় বরিশাল সরকারি বালিকা বিদ্যালয় থেকে চাঁদপুর, খুলানার গল্লামারিসহ অনেক জায়গায় অভিযান চালানো হয়। বরিশালে তৎকালীন এডিসি আজিজুল ইসলাম নিজের গাড়িটি সংগ্রাম পরিষদের কাছে দিয়ে তিনি সাইকেলে চলাচল করতেন। এখান থেকেই সরকারি কর্মচারীরা ভাতা নিয়ে যেতেন।

মুক্তিযোদ্ধারা এখান থেকেই দিক নির্দেশনা নিয়ে অভিযানে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। ২৫ এপ্রিল পাকিস্তানি বাহিনী সড়ক -আকাশ ও নৌপথ থেকে একযোগে বরিশাল আক্রমণ করে। বরিশালে ঢোকার মুখে চরবাড়িয়া ও গৌরনদীর কটকস্থলে তারা বাধা পান। চরবাড়িয়ায় গণহত্যা চালিয়ে অর্ধশতাধিক মানুষকে মেরে ফেলার পর পাকিস্তানি বাহিনী কীর্তনখোলা নদীর পাড়ে বরিশালের পানি উন্নয়ন বোর্ড অফিসে দক্ষিণাঞ্চলীয় হেড কোয়ার্টার গড়ে তোলে।

সেখানে বাংকার খুড়ে, ভারি অস্ত্রের সমাবেশ ঘটান তারা। প্রতিদিন বরিশাল, ঝালকাঠী, গৌরনদীসহ দূরদূরান্ত থেকে নিরীহ মানুষদের ধরে এনে তারা গুলি করে হত্যা করে লাশ খালে ফেলে দিতো । শত শত মানুষকে ধরে এনে নৃশংস নির্যাতন করতো। এই ওয়াপদাসংলগ্ন খাল ও ব্রিজে মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে দুই থেকে তিন হাজার মানুষকে মেরে ফেলা হয়।

পাকিস্থানি সেনাদের বিরুদ্ধে ২৫ এপ্রিল থেকে ৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত মুক্তিযোদ্ধারা অতর্কিতে গেরিলা হামলা চালিয়ে বহু ক্ষয়ক্ষতি করে।। ৭ ডিসেম্বর পাকিস্থানি সেনারা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে সভা করে বরিশাল ত্যাগের সিদ্ধান্ত নেয়। অবশেষে ৮ ডিসেম্বর নগরীতে কারফিউ জারি করে খুব ভোরে পাকিস্থানি সেনারা লঞ্চ ও স্টিমার নিয়ে বরিশাল ত্যাগ করে ঢাকার দিকে রওনা দেয়।

চাঁদপুরের কাছে মেঘনায় পাকিস্থানি সেনাবোঝাই লঞ্চ-স্টিমারের ওপর ভারতীয় বাহিনীর নেতৃত্বে, মিত্র বাহিনী বোমা হামলা চালালে কয়েক শ পাকিস্তানি সেনার সলিল সমাধি ঘটে। পাকিস্থানি সেনাদের বরিশাল ত্যাগের সংবাদ পেয়ে নবগ্রামের কাছে সুলতান মাস্টারের নেতৃত্বে মুক্তিযোদ্ধাদের দলটি প্রথমে শহরে প্রবেশ করে কোতয়ালি থানায় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উড়ায়।

এরপর একে একে অন্যান্য বাহিনী জেলখানাসহ বহু স্থাপনা দখলে নেওয়া হয়। পাকিস্তানিদের পালিয়ে যাওয়ার পর জয় বাংলা ধ্বনিতে হাজার হাজার জনতা রাজপথে নেমে পড়ে। মুক্ত হয় বরিশাল।