ডেস্করিপোর্ট ধারাবাহিকভাবে লোকসান গুনতে থাকা, জমি বেহাত হয়ে যাওয়া, টিকিট কালোবাজারি ও রেলের সামগ্রিক অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে এই মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
সংসদীয় কমিটিতে মন্ত্রণালয়ের দেওয়া কার্যপত্র থেকে জানা যায়, মন্ত্রণালয় বলেছে তারা ট্রেনভিত্তিক খরচের হিসাব তৈরি করে না। ‘রেলওয়ে কস্টিং প্রোফাইল’-এ ট্রেনের প্রতি কিলোমিটার চালানোর খরচ হিসাব করা হয়। কমিটিতে দেওয়া মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমাঞ্চলে ৪০টি ট্রেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। বছরে এই ট্রেনগুলোয় আয় হয়েছে ৯৮ কোটি ৬১ লাখ ৫৫ হাজার ৯৯০ টাকা। কিন্তু ব্যয়ের কোনো খরচ বা হিসাব দেওয়া হয়নি। এ ঘটনায় কমিটি ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করে।
মঙ্গলবার জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এ হিসাব দেওয়া হয়। কমিটির বৈঠকে রেলের আয়-ব্যয় নিয়ে আলোচনা হয়। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে এ সময় জানানো হয়, গত তিনটি অর্থবছর আগে বেসরকারি সংস্থা পরিচালিত রেলে প্রতি কিলোমিটার যাত্রীপ্রতি খরচ হয়েছে ২ টাকা ৪৩ পয়সা। আর আয় হয়েছে ৬২ পয়সা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মালামাল পরিবহণ বাবদ প্রতি কিলোমিটারে টনপ্রতি খরচ হয়েছে ৮ টাকা ৯৪ পয়সা। আর এই সময়ে আয় হয়েছে ৩ টাকা ১৮ পয়সা। তবে এই হিসাবে সন্তুষ্ট নয় সংসদীয় কমিটি। তারা ট্রেনপ্রতি খরচের হিসাব চেয়েছে।
কমিটি বেসরকারি পর্যায়ে পরিচালিত ৪০টি ট্রেনের বছরপ্রতি আয়-ব্যয়ের বিস্তারিত তথ্য পরের বৈঠকে উপস্থাপনের জন্য বলেছে। বৈঠকে কমিটির এক সদস্য বলেন, বেসরকারি খাতে দিয়েও যদি রেল লোকসানে থাকে, তাহলে লিজ দেওয়ার কোনো অর্থ হয় না। রেলওয়ে নিজেই তো চালাতে পারে। আর আমরা আয়-ব্যয় উভয়েরই হিসাব চেয়েছিলাম। সেটা তারা দেয়নি। এজন্য পরের বৈঠকে বিস্তারিত জানাতে বলা হয়েছে।
এদিকে গত বৈঠকে কমিটির পক্ষ থেকে অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য কোরিয়া, চীন কিংবা জাপানের রেলওয়ের কার্যক্রম সরেজমিন পরিদর্শনের জন্য কমিটির সদস্যদের সফরের ব্যবস্থা করার সুপারিশ করা হয়। তবে মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, কোরিয়া, জাপান ও চীনে করোনাভাইরাসের কারণে এখনো ভ্রমণ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিধিনিষেধ জারি রয়েছে। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর ভ্রমণসংক্রান্ত বিধিনিষেধ শিথিল হলে বর্ণিত ভ্রমণের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বেঠকে চট্টগ্রামের সিআরবি অথবা কুমিরায় ১৩ একর জমিতে হাসপাতাল নির্মাণ, অবৈধভাবে দখলকৃত সৈয়দপুর রেলওয়ে স্টেশনের জায়গা স্থানীয় সংসদ সদস্য ও জনগণের সহযোগিতায় পুনরুদ্ধার, হবিগঞ্জের সাটিয়াজুরী রেলওয়ে স্টেশন পর্যটন সুবিধাসহ আধুনিকায়ন বিষয়ে নির্দেশনা দেওয়া হয়।
কমিটির সভাপতি এবিএম ফজলে করিম চৌধুরী এতে সভাপতিত্ব করেন।