রিপোর্ট নিজস্ব প্রতিবেদক:বাকেরগঞ্জের ২নং চরাদী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ফারুক মল্লিকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, ভূমিদস্যুতা, নারী কেলেঙ্কারী, মাদক বাণিজ্যসহ একাধিক অভিযোগে পাওয়া গেছে।
বর্তমানে ইউনিয়ন আওয়ামীলীগে কোন পদপদবীতে না থাকলেও ক্ষমতাসীন দলের মস্তবড় নেতা বলে জনসম্মুখে বুলি উড়াচ্ছেন সে। জানা গেছে, বরিশাল জেলার বাকেরগঞ্জ উপজেলার গোপালপুরের বাসিন্দা মরহুম আতাহার উদ্দিন মল্লিকের ছোটপুত্র চরাদী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারন সম্পাদক ফারুক মল্লিকের অত্যাচারে এলাকাবাসী অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।
তার বেপরোয়া চাঁদাবাজী,ভূমিদস্যুতা, নারী কেলেঙ্কারী আর মাদক বাণিজ্যসহ নানা কু-কর্মের কারনে এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভের সৃস্টি হয়েছে। তার অত্যাচারের ভয়ে এলাকার কেউ প্রকাশ্যে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছেন না।
জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দল আওয়ামীলীগের সাইনবোর্ড সাটিয়ে এলাকার সংখ্যালঘু মুকুল গুহসহ একাধিক ব্যাক্তির জমি জবর দখল করে বীরদর্পে ভূমিদস্যুতা চালিয়ে যাচ্ছেন সে। এসময় অপকর্মের পাশাপাশি ১২নং হলতা বোর্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা কনিকার সাথে অবৈধ সম্পর্কে লিপ্ত থাকার কারনে ফারুক মল্লিকের স্ত্রী রুনা লায়লা তিন সন্তান সহ বাড়ি ছেড়েছেন অনেক আগেই।
সূত্রে নিশ্চিত হওয়া গেছে,১২নং হলতা বোর্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা কনিকার সাথে ফারুক মল্লিকের অবৈধ আদান প্রদানের বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে ঐ স্কুলের তৎকালীন প্রধান শিক্ষক সুমনের হাতে ধরা খায় তারা। এসময় তিনি তার প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসী ফারুক মল্লিক শিক্ষক সুমনকে লাঞ্ছিত করেন। এমনকি নিজের প্রেমের পথের কাটা পরিস্কার করতে স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুমনকে অন্যত্রে বদলি করায় সে। যার পেছনে কলকাঠি নেড়েছেন মল্লিক।
সূত্রে আরও জানাগেছে, ফারুক মল্লিক মাধ্যমিক পাস হলেও ডিগ্রীপাশের ভূয়া সনদ বানিয়ে ১২নং হলতাবোর্ড সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি পদটি বাগিয়ে নিয়েছেন। তার এসব অপকর্মের প্রতিবাদ করায় স্থানীয় বাসিন্দা স্বপন মৃধা ও সাইফুল মৃধাকে মারধর করে এবং পলাশ নামের অপর একজনের পা ভেঙ্গে দিয়েছেন সন্ত্রাসী ফারুক মল্লিক। এ ফারুক মল্লিক মুখে আওয়ামীলীগের গুন কৃর্তন করলেও বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মহাজোটের প্রার্থী নাসরিন জাহান রত্নার বিরোধীতা করে সিংহ মার্কার স্বতন্ত্র প্রার্থী ফারুক তালুকদারের পক্ষে নির্বাচনী মাঠে কাজ করায় এলাকার আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের সামনে ফারুক মল্লিককে গনধোলাই দিয়েছিল।
সে সময় লজ্জায় কিছুদিন এলাকা ছেড়ে গা ঢাকা দিয়ে থাকলেও বর্তমানে আবার তিনি চরাদী ইউনিয়নে ফিরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। স্কুলের সভাপতি হয়ে স্কুলের অর্থ আত্নসাত সহ তার বাবার নামে কাগুজে কলমে একটি পাঠাগার বানিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রনালয় থেকে ২ লাখ টাকা এনে সব টাকাই তিনি আত্নসাত করেছেন বলেও নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এছাড়াও এলাকায় বিদ্যুত সংযোগের কথা বলে স্থানীয় বাসিন্দা মতিন, দেলোয়ার, খালেক সহ একাধিক লোকের কাছ থেকে মিটার প্রতি ১হাজার টাকা করে প্রায় ২লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বলেও নিশ্চিত হওয়া গেছে। এছাড়াও বিএনপি, জামায়াতপ্রীতির কারনে দলের সাধারন নেতা কর্মীদের কাছে কোনঠাসা হয়ে পড়েছেন বহু অপকর্মের অনুঘটক ও বিতর্কিত কথিত আ’লীগ নেতা ফারুক মল্লিক।
ফারুক মল্লিকের বিরুদ্ধে বিস্তর অভিযোগ থাকা সত্তেও কোন এক অদৃশ্য ক্ষমতার কারনে এখনো বহাল তবিয়তে আছেন তিনি। অবিলম্বে ফারুক মল্লিককে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দিতে প্রশাসনের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন এলাকাবাসী। এবিষয়ে অভিযুক্ত ফারুক মল্লিকের বক্তব্য নেয়ার জন্য চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।