ডেস্ক রিপোর্ট ।। বরিশাল জেলার বাবুগঞ্জ উপজেলার ২ নং কেদারপুর ইউপি চেয়ারম্যান নূরে আলম সরকার থেকে বরাদ্দকৃত ত্রান, কাবিখা, কাবিটা, টিআর কর্মসূচী, গ্রামীন অবকাঠামোর বরাদ্দকৃত সামগ্রী সঠিক ভাবে বিতরন না করে বরাদ্দকৃত চাল, গম, অর্থ নিজে আত্মসাৎ করায় তার বিরুদ্ধে ৭ জন ইউপি সদস্য ও ২ জন নারী ইউপি সদস্য সহ মোট ৯ জন মেম্বার অনাস্থা প্রস্তাব দিয়েছেন।
শনিবার (৩০ মার্চ) সকাল সাড়ে ১১ টায় শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত বরিশাল প্রেসক্লাবে লিখিত সংবাদ সম্মেলনে অনাস্থা দেয়া মেম্বাররা এ তথ্য জানিয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে অনাস্থা দেয়া ইউপি সদস্যদের পক্ষ থেকে ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মুছা আলী জানান, চেয়ারম্যান নূরে আলম বেপারী দুঃস্থ গরীব লোকের ভিজিটি কার্ডের টাকা, ইউনিয়ন পরিষদ বিল্ডিং সংস্কারের ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করলেও কোন কাজ না করে পুরো টাকা আত্মসাৎ করেন।বিগত ২০২০ সালে বিশেষ ক্ষমতা আইনে জি,আর, কেস নং- ৪১/২০২০ (বাবুগঞ্জ) থানার কেস নং-১০ বর্তমানে পেন্ডিং আছে। যাহাতে ৫১৫২ কেজি ভিজিডিও জেলেদের সরকারী চাল, র্যাব-৮ কর্তৃক আটক করে। যার ফলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয় তাকে চেয়ারম্যান পদে হতে বরখাস্ত করেন।এর আগে চেক জালিয়াতি মামলায় বরিশাল ১ম যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিজ্ঞ বিচারক মোঃ ইফতেখার আহমেদ ১নং বৎসর সশ্রম কারাদন্ড ও ১৩ লাখ ১৫ হাজার ৩৮৫ টাকা জরিমান করেন।
দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান নূরে আলম ৫১২টি জেলে কার্ডধারীরা ৪০ কেজি করে চাল বরাদ্দ থাকলেও কোন রকম চাল না দিয়ে কালো বাজারে বিক্রি করে আত্মসাৎ করেন। বিগত ২১/২২/২৩/২৪ন অর্থ বৎসরের বরাদ্দকৃত টিউবওয়েল আজও মেম্বাররা বা সাধারন লোকজন পায়নি। টিউবওয়েল বরাদ্দ সাধারন মানুষের কাছ থেকে ৩৫ হাজার টাকা করে নিয়ে তাহা আত্মসাৎ করেন। ২০২১ সালে ১৩টি, ২২ সালে ১৪টি, ২৩ সালে ১৩টি।
বিগত ইংরেজী ০৭/০৩/২০১৭ তারিখের ৩৭৬নং রেজিষ্ট্রিকৃত ৩৭৬নং দলিলের দাতাদের কাছ থেকে জাল- জালিয়াতি করে সিকস্থি জমির দাখিলা নিজ হাতে দাগ নম্বর বসিয়ে জাল দলিল করে জোর পূর্বক গ্রহন করিয়া উক্ত ভুমিতে ৪ তলা বিল্ডিং করে নিজে বসবাস করিয়া আসিতেছেন। উক্ত জমি হইল সরকারী খাস জমি তথ্য সংযুক্ত। উক্ত বিল্ডিং এর গোপন কক্ষে বিভিন্ন সময়ে অত্র ইউনিয়নের মেম্বার ও সাধারন জনগনকে ডেকে এনে নির্যাতন, ভয় ভীতি ও প্রান নাশের হুমকি প্রদান করে।এছাড়াও গরীব মানুষের জায়গা জমি দখল করে অবৈধ ইট, ভাটা নির্মান করেন ডগ বা জাহাজ নির্মান এবং গরুর ফার্ম তৈরী করে। যাহা পরিবেশ অধিদপ্তরের কোন অনুমোদন নাই। উক্ত দূর্নীতিগ্রস্থ চেয়ারম্যানের কারনে ইউনিয়ন পরিষদের জনগন সরকারী অথবা বেসরকারী সকল সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত। তিনি ইউনিয়ন পরিষদের সদস্যদের না জানাইয়ালুটপাট করিয়াছেন এবং করিতেছেন।
দুর্নীতি বাজ এই চেয়ারম্যানের দূর্নীতির বিষয় স্থানীয় দৈনিক কীর্তনখোলা পত্রিকায় বিগত ইংরেজী ২৫/০৯/২০১৭ তারিখ স্থানীয় দৈনিক বরিশালের কথা বিগত ইংরেজী ২৬/০১/২০১৭ তারিখ এবং জাতীয় দৈনিক যুগান্তর পত্রিকায় বিগত ইংরেজী ৩০/০১/২০১৭ তারিখে বিস্তারিত দূর্নীতির বিষয় সংবাদ প্রকাশিত হইয়াছে।তিনি অবৈধ ভাবে নদী থেকে বালু উত্তোলন করে, মোল্লারহাট নামক বাজার সহ অনেক গরীব মানুষের বাড়ী ঘর, নদী ভাঙ্গনে নিয়ে যায়, বালু বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করে। জাল দলিল দিয়ে বিভিন্ন লোকের নামে বেনামে কৃষি লোন উঠাইতেছেন।
একসময় দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান নূরে আলম টেম্পু ড্রাইভার থেকে জীবন জীবিকা শুরু করে বিগত ২০১০ সালে ঈগল পরিবহনের সুপার ভাইজার হিসাবে কর্মরত থাকা অবস্থায় উক্ত ঈগল পরিবহন ছাড়াও বিভিন্ন পরিবহনে ডাকাতি করিতেন। বিগত ২০১৬-২০১৭ সালের কর্মসূচীর টিআর, কাবিখা প্রকল্পের অনিয়ম করিয়া প্রকল্পের অধিন ৪০ দিনের কর্মসূচী বিগত ০৪/০১/২০১৭ তারিখের বরাদ্দের পরিমান ২১,৭৬,০০০/- টাকা, কাবিখা প্রকল্পের ৬,৫৩,৮০/- টাকা, টিআর বরাদ্দের পরিমান ৬,১২,৫৯৩.১৯ টাকা মেম্বার দের সাথে সমন্বয়ে মিটিং ছাড়াই উল্লেখিত প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ এর জন্য নামে বেনামে ব্যাংক হিসাব খুলে প্রকল্প দেখানো হইয়াছে। উক্ত দূর্নীতি গ্রন্থ চেয়ারম্যান, বিভিন্ন মেম্বারের সাধারন মানুষের বাড়ীতে গিয়া সন্ত্রাসীদের দ্বারা ভয় ভীতি দেখান।
এছাড়াও ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বাদের সম্মানি ভাতাও তিনি আত্মসাৎ করিয়াছেন।এলাকায় কেউ জন্ম নিবন্ধন, ওয়ারিশী সনদ,, ট্রেড লাইসেন্স করিতে বা তুলিতে গেলে মোটা অংকের টাকা গ্রহন করেন। তার অনেক গুলো জাহাজ, ড্রেজার, লোড- আনলোড মেশিন ট্রাক, মাহেন্দ্র, জাহাজ নির্মানের জন্য ভগ,ভেকু, আরও অনেক সম্পদ রয়েছে। ট্যাক্স দেন না। ক্ষমতার তার কোন আয়কর ও অপব্যবহার করে পাড় পেয়ে যায়। এলাকার সাধারন মানুষের ফসলী জমি কেটে ইট ভাটার জন্য মাটি নিয়ে আসে, প্রতিবাদ করলে মারধর করেন। যার অনেক সাক্ষ্য প্রমান আছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ইউপি সদস্যরা বলেন,আমরা এরকম দুর্নীতিবাজ লোককে আর চেয়ারম্যান হিসেবে দেখতে চাইনা।তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দফতরের কর্মকর্তাদের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন তারা।